স্বদেশ ডেস্ক:
করোনা ভাইরাসের বেশ কয়েকটি পরিবর্তিত রূপের বিরুদ্ধে চীনের তৈরি টিকা কার্যকর নয় বলে বিরল স্বীকারোক্তি দিয়েছে দেশটির সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন। এ অবস্থায় চীন একটি বিকল্প প্রস্তাব এনেছে। অন্য টিকাগুলো মিশিয়ে প্রতিষেধকের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে বলে মনে করছে তারা।
তবে বিদেশি না দেশি টিকার মিশ্রণের কথা বলা হয়েছে তা নির্দিষ্ট করে জানানো হয়নি। এমন এক সময়ে এই স্বীকারোক্তি ও প্রস্তাব এলো, যখন দেশটির বিভিন্ন কোম্পানির উদ্ভাবিত টিকা বিভিন্ন দেশ প্রয়োগের জন্য সংগ্রহ করেছে। ইতোমধ্যে এই টিকা অন্তত কয়েক কোটি মানুষের মধ্যে প্রয়োগও হয়ে গেছে।
চীনের এই স্বীকারোক্তিতে পরিবর্তিত করোনা স্ট্রেনের বিরুদ্ধে বাজারে থাকা ফাইজার, মডার্না, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসনসহ একাধিক সংস্থার টিকা কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ইতোমধ্যে ইসরায়েলি বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, করোনার দক্ষিণ আফ্রিকান যে ধরনটি বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, তা প্রতিরোধে মার্কিন কোম্পানি ফাইজারের টিকা কম কার্যকর। আবার ভাইরাসটির ব্রিটিশ, আফ্রিকান ও ব্রাজিল স্ট্রেনের বিরুদ্ধে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাও কতটুকু কার্যকর, তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার তো ঘোষণাই দিয়েছে, তাদের দেশে ছড়ানো স্ট্রেনে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোনো কাজ দিচ্ছে না। সেই সঙ্গে এই টিকাগ্রহীতাদের মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধার অভিযোগ তো রয়েছেই।
বার্তা সংস্থা এপি জানায়, গত শনিবার চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর চেংদুতে সিনোভ্যাক টিকা নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন। সংস্থার প্রধান গাও ফু বলেন, বর্তমানে আমাদের যে প্রতিষেধকগুলো রয়েছে, তার কার্যকারিতার হার বেশি নয়। তাই প্রশাসনকে বিকল্প উপায় সম্পর্কে ভাবতে হবে। এ ক্ষেত্রে অন্য টিকাগুলোর মিশ্রণ ঘটিয়ে প্রতিষেধকের শক্তি বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
এদিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার খবরে এবং ফাইজারের টিকা অপ্রতুল- এই অভিযোগে রুশ ও চীনা ভ্যাকসিনের দিকে ঝুঁকতে দেখা যাচ্ছিল ইউরোপকে। রুশ টিকা কিনতে ইতোমধ্যে প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেলেছে জার্মানি ও ফ্রান্স। ওদিকে চীনা টিকা কিনতে উৎসাহ প্রকাশ করেছে হাঙ্গেরি। ফলে চীনের নতুন ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই ইউরোপের দেশগুলো হোঁচট খাবে।
এর আগে চীনা টিকা সিনোভ্যাকের কার্যকারিতা ৫০.৪ শতাংশ বলে ব্রাজিলে পরিচালিত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে উঠে এসেছে। বিপরীতে ফাইজার উদ্ভাবিত টিকার কার্যকারিতা ৯৭ শতাংশ।